বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:৪০ অপরাহ্ন
মোঃ শোয়েব হোসেন
ঢাকা জেলা নবাবগঞ্জ উপজেলা, তরুণদের জন্য শিক্ষনীয় একটি সুন্দর নিদর্শন !
আজ ঈদের ২য় দিন ৩০/০৬/২০২৩ ইং পবিত্র জুম্মাবার বেলা ১২ টার দিকে ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার শোল্লা ইউনিয়নের বোয়ালী গ্রামের মোল্লাবাড়ির একটি বাড়ির নামকরণ করা হলো “আব্বুর স্মৃতি-কুঞ্জ”। মরহুম আলহাজ্ব মোহাম্মদ হোসেন মোল্লার স্মরণে তার মৃত্যুর প্রায় ১০ বছর পর মরহুমের স্মৃতি অম্লান রাখতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে পরিবারিক ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, উক্ত মরহুম বাস্তব জীবনে একজন সৎ, ধার্মিক, বিনয়ী ও পরোপকারী ব্যাক্তি এবং অবসরপ্রাপ্ত রেলওয়ে কর্মকর্তা (ইঞ্জিনিয়ার) ছিলেন। সারা জীবন তিনি গোপনে বহু অসহায় ও দরিদ্র মানুষের নিঃস্বার্থভাবে উপকার করতেন যা প্রায় সকলেরই অজানা। বার্ধক্য ও ডায়াবেটিস জনিত কারণে তিনি গত ০৫/০৭/২০১৩ ইংরেজি তারিখে (রোজ শুক্রবার) তার নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরের বাসভবনে ঘুমের মাঝেই হঠাৎ ইন্তেকাল করেছিলেন এবং সৈয়দপুরের হাতিখানা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়েছিল।
এই প্রসঙ্গে আরো জানা যায়,মরহুমের বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকরির সুবাদে প্রায় ৩২ বছর আগে স্বপরিবারে সৈয়দপুরে যেতে হয়েছিল । তিনি পৈত্রিক সুত্রে ঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ থানার স্থায়ী বাসিন্দা হলেও পরবর্তীতে উক্ত সৈয়দপুরের সামাজিকতা , পরিবেশ এবং মানুষের প্রতি অগাধ ভালোবাসা ও আস্থা সৃষ্টি হওয়াতে এক পর্যায়ে সেখানেও বসতি গড়েছিলেন । উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, সৈয়দপুরের সেই বাঁশবাড়ি এলাকার বাড়িতেও একই ভাবে তাকে স্মৃতি বিজড়িত রাখতে গত রমজানের ঈদের পরে এভাবেই একই নামে নামকরণ করা হয় এই শোয়েব মোল্লার উদ্দোগে এবং তা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হবার পাশাপাশি সকল মহলে প্রশংসিতও হয়।
মরহুমের স্মৃতিচারণ সম্পর্কে তার ছেলে শোয়েব হোসেন মোল্লা বলেন,”আমি জীবিকার তাগিদে ঢাকা থাকি বিধায় এখানে খুব কম আসা হয়। আব্বু নেই কিন্তু আমি সব সময় তাকে অনুভব করি।এই বাড়িটি তৈরি করার পরপরই বিশেষ কাজে কিছু দিনের জন্য আব্বু সৈয়দপুর গেলে সেখানেই তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেছিলেন। এই বাড়ির আঙিনা ও উঠান সহ সবখানেই তার স্মৃতি যেন লেগেই আছে। সময় ও পরিবেশের ব্যবধানে তার স্মৃতিযুক্ত কোন কিছুই যেন অম্লান হতে না পারে তাই তার ভালোবাসার টানে নিজ উদ্যোগে তারই নিজ হাতে গড়া এ বাড়ির সাথে তাকেও স্মৃতিময় করে রাখতেই এমন ব্যাবস্থা নিলাম। আজ আমরা যেভাবে যতটুকু ভালো আছি সবই আব্বুর অবদান। তিনি আমাদের স্মৃতিতে চির জাগ্রত। মহান আল্লাহ পাক আব্বুকে ওপারে বেহেশতের সর্বোচ্চ মোকামে রাখুন এই প্রার্থনাই আজীবন করি। আব্বুর জন্য সবার কাছে মনে প্রাণে দোয়া কামনা করছি”।
এলাকার স্থানীয় মহল ও আত্নীয় স্বজন মরহুমের প্রতি তার পরিবারের পক্ষ থেকে এই ভালোবাসা ও অনুরাগ প্রদর্শন করায় মরহুম হোসেন মোল্লার পরিবারের সবাইকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।তাদের মতে,”পিতার প্রতি এমন ভালোবাসা ও উদ্যোগ একটি সুন্দর উদাহরণ হয়ে থাকলো যা অবশ্যই আগামী প্রজন্মের জন্য শিক্ষনীয় বিষয় বটে যা মা-বাবার প্রতি ভালোবাসার নিদর্শন (যা গুরুত্বপূর্ণ ও অসামান্য) হিসেবে ধরে রাখতে তরুণদের বিশেষ ভাবে অনুপ্রেরনার উৎস হিসেবে কাজ করবে নি:সন্দেহে”!
পরিশেষে উক্ত মরহুমের পরিবারের পক্ষ থেকে শোয়েব মোল্লা সকলের কাছে বাবার জন্য আন্তরিক ভাবে দোয়া প্রার্থনা করেন। জুম্মার নামাজের পর এলাকার বোয়ালী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে মরহুম হোসেন মোল্লা স্মরণে দোয়া খায়ের অনুষ্ঠিত হয়।